বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তে মিয়ানমার অভ্যন্তরে মধ্যরাতে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। আকস্মিক গুলির শব্দে আতঙ্কে রাত কাটিয়েছে সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোর বাসিন্দারা।
রোববার (১০ আগস্ট) রাত ১০টার পর ঘুমধুম ইউনিয়নের তমব্রু সীমান্তের বিপরীতে মিয়ানমার অংশে এই গোলাগুলি হয় বলে নিশ্চিত করেছেন বিজিবির কক্সবাজার ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম খায়রুল আলম। তিনি জানান, সীমান্ত পিলার ৩৪ ও ৩৫-এর মাঝামাঝি এলাকায় শূন্যরেখা থেকে প্রায় ৩০০–৩৫০ মিটার ভেতরে টানা ৭ থেকে ১০ মিনিট ধরে গোলাগুলি চলে। এ সময় অন্তত ৩০–৪০ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়।
বিজিবি কর্মকর্তা বলেন, “এপারের দিকে কোনো গুলি আসেনি। ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ঘটেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র সংগঠন আরসা বা আরএসও-এর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। তবে কোন পক্ষের সঙ্গে লড়াই হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।”
ঘটনার পর বিজিবি সীমান্তে টহল ও নজরদারি জোরদার করেছে। লে. কর্নেল খায়রুল জানান, “তাৎক্ষণিক অতিরিক্ত টহল দল মোতায়েন করা হয়েছে। বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমারের তুমব্রু এলাকার নারিকেল বাগিচা অঞ্চলে আরাকান আর্মির দুটি ক্যাম্প আছে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই এলাকাতেই বড় ধরনের সংঘাতের সূত্রপাত হয়েছে।
ঘুমধুম ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নুর মোহাম্মদ ভূট্টো বলেন, “দীর্ঘ দেড় বছরের বেশি সময় পর সীমান্তে এমন গুলির শব্দ শোনা গেল। প্রায় ১০ মিনিট ধরে গোলাগুলি চলেছে। আমরা আতঙ্কে ছিলাম, কী হচ্ছে বোঝা যায়নি।”
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের অক্টোবরের পর থেকে আরাকান আর্মি মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে তারা দাবি করে, মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তের রাখাইন অংশের পুরো ২৭১ কিলোমিটার এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে।
-পার্বত্য সময়